ভোলায় সবজি চাষীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে

0
9
আমাদের ফেইসবুক পেইজ এ লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন।

নিউজ ডেস্ক!!

দ্বীপ জেলা ভোলার সবজি চাষের অন্যতম অঞ্চল চরফ্যাসন, কৃষকরা ভাগ্য পরিবর্তন করার আশায় অন্যান্য সবজির পাশাপাশি চাষ করেন শসা, ভোলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতি বছর রাজধানীতে রপ্তানি করা হয়। সবজির পাশাপাশি শসা রাজধানীতে রপ্তানির করার ছবিটা দেখে এ বছর নতুন চাষীরাও ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন করতে অন্যান্য সবজির তুলনায় বেশিরভাগ শসা চাষ করেন। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রতি কেজি শসা ১৫ থেকে ২০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা ৭ থেকে ৫ টাকায় বিক্রয় করতে হয়।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহামারী করোনা ভয়াবহ রূপ ধারণ করা পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়া ক্রেতাদের চাহিদা কমে যাওয়া পাইকারদের সংকটের কারণে বেশীরভাগ সবজির দাম কমে গেছে। এখন প্রতি কেজি শসা তিন টাকা দরে বিক্রি করছেন কৃষকরা। তারপরও ক্রেতা মিলছে না। লাভতো দূরের কথা, জমি থেকে সবজি ওঠানো ও পরিবহন খরচ উঠানো যাচ্ছে না। ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে সবজি হতাশা হয়ে পড়ছেন কৃষক।

কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চরফ্যাসন উপজেলায় বার্ষিক ৮৫ হাজার ১৯২ হেক্টর আবাদি জমি ও ৩ হাজার ৩৩৭ হেক্টর অনাবাদি জমি রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে এককভাবে শসার আবাদ হয়েছে। অন্যান্য সবজি চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে। বিশেষ করে ৩টি ইউনিয়নের আসলামপুর ৩৫০ একর, চর মাদ্রাজ ১০০ একর, জাহানপুর, ১২০ একর জমিতে শসার চাষ করেছেন কৃষকরা।

আসলামপুর এলাকার সবজি চাষিরা বলেন, ‘অন্যের জমি বর্গা নিয়া তিন একর জমিতে শসা, লাউ, বরবটিসহ বিভিন্ন সবজি আবাদ করেছি। তবে লাউ, বরবটির দাম কিছুটা কমলেও শসা তোলার খরচ ওঠে না। তাই ক্ষেতেই পড়ে আছে শসা।

চর মাদ্রাজ এলাকার শসা চাষি জহির উদ্দিন বলেন, ‘আড়ত থেকে দাদন নিয়ে চার একর জমিতে শসা লাগিয়েছি। এতে আমার দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন এত কম দাম হলে কিভাবে আমার খরচ উঠাবো।

সবজির আড়তদার কাইয়ুম বাণিজ্যালয়ের মালিক আবদুল কাইয়ুম মিয়াজি বলেন, ‘আমার আড়তের অন্তর্ভুক্ত চর মাদ্রাজের মাঝি বাড়ির বাছেদ মাঝি, ফারুক মাঝি, জামাল আহন, আবদুল্লাহপুর এলাকার রফিক হাওলাদার, নূরনবি ডাক্তারসহ ২৫-৩০ জন চাষি আছে। এদেরকে সবজি চাষের জন্য প্রায় বিশ লাখ টাকা দাদন দিয়েছি। তারা সবজি চাষ করে আমার আড়তে বিক্রি করেন। পর্যায়ক্রমে দাদনের টাকা পরিশোধ করেন। প্রতি কেজি শসা ৭ টাকা দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করতেছি।’

তিনি জানান, অন্যান্য সবজি মধ্যে কাঁচা মরিচের কেজি ১৬০ টাকা, করলা ৩০-৩৫ টাকা, পেপে ২০ টাকা, দুন্দুল ১৫-২০ টাকা, চিচিঙ্গা ২৫-৩০ টাকা, লাউ ২৫-৩০ টাকা দরে বিক্রি করেন।

কীটনাশক ও ফসলী বীজ বিক্রেতা মেসার্স কৃষি বিতান এর মালিক মনির হোসেন বলেন, কীটনাশক ও বীজের দাম আগের মতোই আছে। কোম্পানিভেদে দামের তারতম্য কিছুটা হলেও কৃষকরা তাদের সাধ্যের মধ্যে ক্রয় করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু হাসনাইন বলেন, উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় সবজি চাষিরা অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ উপজেলায় সর্জন পদ্ধতিতে ৭ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। উপজেলার জিন্নাগড়ে তিন বছর আগে থেকে বিষমুক্ত সবজি চাষ হচ্ছে। গত দুই বছর ধরে সেখানকার সবজি বিদেশে পাঠানো হয়। বর্তমানে আসলামপুর এলাকায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়। তা বিষমুক্তির আওতায় আনতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।

আমাদের ফেইসবুক পেইজ এ লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন।